মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশের আয়তন বৃদ্ধি, শ্রীলঙ্কার চেয়ে বড় ভূখণ্ড পাচ্ছে বাংলাদেশ!

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:৩৭:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৯০ Time View

বাংলাদেশের আয়তন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারণ পদ্মা, মেঘনা ও বদ্বীপ অঞ্চলে বিগত বছরগুলোতে প্রায় ৫০ টিরও বেশি দ্বীপ জেগে উঠেছে। আর এগুলো মিলে  হিসাব করলে গোটা শ্রীলঙ্কার চেয়ে বড় ভূখণ্ড পাচ্ছে বাংলাদেশ। যা ইতোমধ্যেই মানুষের বসবাস উপযোগী। এর ফলে এই দিক থেকে বাংলাদেশের আয়তন বেড়ে গিয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে আয়তন বেড়ে চলেছে। এর কারণ হল বাংলাদেশ উপকূল অঞ্চলে অনেক বেশি দ্বীপ জেগে উঠেছে এবং সেই কারণেই বাংলাদেশের আয়তন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

১৯৭০ সালে বাংলাদেশের ভোলায় আঘাত হানে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সাইক্লোন ভোলা। সেই সত্তরের সাইক্লোনের বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠে একটি দ্বীপ নিউমুর বা দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ। আর এই দ্বীপ নিয়ে তখন শুরু হয় ভারত বাংলাদেশের ভিভাজন। ভূ বিশ্লেষকদের মতে,দক্ষিণ তালপট্টির মাটির নীচে বিপুল পরিমাণ গ্যাস কয়লা ও খনিজ সম্পদের ভাণ্ডার থাকার কারণেই ভারত ও বাংলাদেশের আগ্রহের কারণ ছিল। দ্বীপ নিয়ে বিবাদের মীমাংসার জন্য ১৯৭৯ সালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে ভারতে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় ।

বাংলাদেশে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দ্বীপটি বাংলাদেশের দাবি করে বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত ও স্যাটেলাইট ছবি পেশ করেন। কিন্তু তাতেও মানতে নারাজ ভারত। এরপর ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ পাঠায় এবং সেখানে বিএসএফ সীমান্তরক্ষী বাহিনী চৌকি স্থাপন করে। এর পর বসে থাকেনি বাংলাদেশ। কোস্ট গার্ডের দুটি গান বোট প্রেরণ করে এবং ২৫০০০  বর্গকিলোমিটারের এই দ্বীপটি উড়িয়ে দেয় লাল সবুজের পতাকা।

এরপর ২০১৬ সালের জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে এই দ্বীপটি ছিনিয়ে নেয় ভারত। কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলেদ্বীপের অস্তিত্বই আর রইল না হারিয়ে যায় গভীর সমুদ্রে। আর তাতে ভারতের কপাল পুড়লেও বাংলাদেশকে দু হাত ভরে দিচ্ছে সৃষ্টিকর্তা। একটি চর ভারত নিয়ে গেলেও দ্বীপ চর কুকরি মুকরি ,  চর ওসমান, চর কামাল, চর গাঙ্গুলিয়ার  মতো শত শত নতুন চর জেগে উঠেছে। বাংলাদেশে ভূমি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে প্রতিবছর বাংলাদেশে ৩২ কিলোমিটার ভূমি নদী ভাঙন ও সমুদ্রে হারিয়ে যায়।

অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা ও পদ্মা নদী দিয়ে ১০০ কোটি টন পলি বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে জেগে উঠেছে বায়ান্ন বর্গ কিলোমিটার আয়তনের নতুন চর।ভাঙাগড়ার এই খেলায় প্রতিবছর প্রায় ২০ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বাড়ছে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের। আর এভাবে বাড়তে থাকলে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার চেয়েও একসময় বড় ভূখণ্ড পাবে বাংলাদেশ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Tavir Rahman

জনপ্রিয়

দেশের আয়তন বৃদ্ধি, শ্রীলঙ্কার চেয়ে বড় ভূখণ্ড পাচ্ছে বাংলাদেশ!

Update Time : ০৫:৩৭:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশের আয়তন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারণ পদ্মা, মেঘনা ও বদ্বীপ অঞ্চলে বিগত বছরগুলোতে প্রায় ৫০ টিরও বেশি দ্বীপ জেগে উঠেছে। আর এগুলো মিলে  হিসাব করলে গোটা শ্রীলঙ্কার চেয়ে বড় ভূখণ্ড পাচ্ছে বাংলাদেশ। যা ইতোমধ্যেই মানুষের বসবাস উপযোগী। এর ফলে এই দিক থেকে বাংলাদেশের আয়তন বেড়ে গিয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে আয়তন বেড়ে চলেছে। এর কারণ হল বাংলাদেশ উপকূল অঞ্চলে অনেক বেশি দ্বীপ জেগে উঠেছে এবং সেই কারণেই বাংলাদেশের আয়তন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

১৯৭০ সালে বাংলাদেশের ভোলায় আঘাত হানে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সাইক্লোন ভোলা। সেই সত্তরের সাইক্লোনের বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠে একটি দ্বীপ নিউমুর বা দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ। আর এই দ্বীপ নিয়ে তখন শুরু হয় ভারত বাংলাদেশের ভিভাজন। ভূ বিশ্লেষকদের মতে,দক্ষিণ তালপট্টির মাটির নীচে বিপুল পরিমাণ গ্যাস কয়লা ও খনিজ সম্পদের ভাণ্ডার থাকার কারণেই ভারত ও বাংলাদেশের আগ্রহের কারণ ছিল। দ্বীপ নিয়ে বিবাদের মীমাংসার জন্য ১৯৭৯ সালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে ভারতে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় ।

বাংলাদেশে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দ্বীপটি বাংলাদেশের দাবি করে বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত ও স্যাটেলাইট ছবি পেশ করেন। কিন্তু তাতেও মানতে নারাজ ভারত। এরপর ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ পাঠায় এবং সেখানে বিএসএফ সীমান্তরক্ষী বাহিনী চৌকি স্থাপন করে। এর পর বসে থাকেনি বাংলাদেশ। কোস্ট গার্ডের দুটি গান বোট প্রেরণ করে এবং ২৫০০০  বর্গকিলোমিটারের এই দ্বীপটি উড়িয়ে দেয় লাল সবুজের পতাকা।

এরপর ২০১৬ সালের জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে এই দ্বীপটি ছিনিয়ে নেয় ভারত। কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলেদ্বীপের অস্তিত্বই আর রইল না হারিয়ে যায় গভীর সমুদ্রে। আর তাতে ভারতের কপাল পুড়লেও বাংলাদেশকে দু হাত ভরে দিচ্ছে সৃষ্টিকর্তা। একটি চর ভারত নিয়ে গেলেও দ্বীপ চর কুকরি মুকরি ,  চর ওসমান, চর কামাল, চর গাঙ্গুলিয়ার  মতো শত শত নতুন চর জেগে উঠেছে। বাংলাদেশে ভূমি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে প্রতিবছর বাংলাদেশে ৩২ কিলোমিটার ভূমি নদী ভাঙন ও সমুদ্রে হারিয়ে যায়।

অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা ও পদ্মা নদী দিয়ে ১০০ কোটি টন পলি বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে জেগে উঠেছে বায়ান্ন বর্গ কিলোমিটার আয়তনের নতুন চর।ভাঙাগড়ার এই খেলায় প্রতিবছর প্রায় ২০ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বাড়ছে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের। আর এভাবে বাড়তে থাকলে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার চেয়েও একসময় বড় ভূখণ্ড পাবে বাংলাদেশ।