রংপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাংবাদিক সহ আহত ২০

  • Reporter Name
  • Update Time : 11:12:16 am, Saturday, 5 April 2025
  • 61 Time View

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারের সমর্থক মোন্নাফ (৬০), কাঁচাবাড়ি এলাকার মিতু মিয়া (৪০), একই এলাকার শফিকুল (৫৫), মধুপুর কালজানি এলাকার লাবলু মিয়া (৪৫), কাঁচা বাড়ির রুহুল আমিনের ছেলে জয়নাল (২৫), মুন্না ও মংলু গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনার ছবি তুলতে গেলে গ্লোবাল টেলিভিশনের রংপুর জেলা প্রতিনিধি নুরুন্নবী নুরু, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ফুয়াদ হোসেন, বাংলাভিশনের ক্যামেরা পার্সন সাইফুল ইসলাম মুকুলসহ স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়ে ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেন মোহাম্মদ আলী সরকারের সমর্থকরা।

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার বলেন, ‘কে বা কারা কার দোকানে হামলা, ভাঙচুর করেছে—এই বিষয় নিয়ে মানিক চেয়ারম্যানের লোকজন ফেসবুকে আমাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস ও বক্তব্য দিয়ে আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছেন। এর প্রতিবাদ করতে গেলে মানিক চেয়ারম্যানের লোকজন হামলা চালিয়ে আমার লোকজনকে আহত করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে।’

এ বিষয়ে বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও কালুপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক বলেন, ‘গত পরশু দিন বিনা কারণে বদরগঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবসায়ী জাইদুল হকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মোহাম্মদ আলী সরকারের লোকজন হামলা ও লুটপাট চালিয়ে ভাঙচুর করেন। ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সরোয়ার জাহানসহ আমরা বাধা দিতে গেলে মোহাম্মদ আলীর লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। ব্যবসায়ীর দোকান ভাঙচুর ও হামলার প্রতিবাদে আজকে সকল ব্যবসায়ী মিলে মানববন্ধন আয়োজন করি। এ সময় মোহাম্মদ আলী সরকারের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় আমাদের ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়েছে।’

বদরগঞ্জ পৌর বিএনপির সদস্যসচিব কমল লোহারি বলেন, ‘এটা দলীয় কোনো দ্বন্দ্ব নয়। মোহাম্মদ আলী সরকার ও মানিক চেয়ারম্যান তারা পূর্বে থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তেন। তারই প্রতিফলন আজকের এই সংঘর্ষ। আমরা চাই না বদরগঞ্জে এরকম কোনো ঘটনা ঘটুক। আজ তাদের কারণে বদরগঞ্জবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।’

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য আমরা মাঠেই রয়েছি।’

এ বিষয়ে যৌথ বাহিনীর ক্যাপ্টেন মেহেদী জানান, বদরগঞ্জ থানার সাথে যোগাযোগ করে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। আশা করি আর কোনো ঘটনা ঘটবে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Farhan Shekh

Popular Post

গাইবান্ধায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে নিহত-১ আহত ৩

রংপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাংবাদিক সহ আহত ২০

Update Time : 11:12:16 am, Saturday, 5 April 2025

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারের সমর্থক মোন্নাফ (৬০), কাঁচাবাড়ি এলাকার মিতু মিয়া (৪০), একই এলাকার শফিকুল (৫৫), মধুপুর কালজানি এলাকার লাবলু মিয়া (৪৫), কাঁচা বাড়ির রুহুল আমিনের ছেলে জয়নাল (২৫), মুন্না ও মংলু গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনার ছবি তুলতে গেলে গ্লোবাল টেলিভিশনের রংপুর জেলা প্রতিনিধি নুরুন্নবী নুরু, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ফুয়াদ হোসেন, বাংলাভিশনের ক্যামেরা পার্সন সাইফুল ইসলাম মুকুলসহ স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়ে ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেন মোহাম্মদ আলী সরকারের সমর্থকরা।

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার বলেন, ‘কে বা কারা কার দোকানে হামলা, ভাঙচুর করেছে—এই বিষয় নিয়ে মানিক চেয়ারম্যানের লোকজন ফেসবুকে আমাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস ও বক্তব্য দিয়ে আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছেন। এর প্রতিবাদ করতে গেলে মানিক চেয়ারম্যানের লোকজন হামলা চালিয়ে আমার লোকজনকে আহত করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে।’

এ বিষয়ে বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও কালুপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক বলেন, ‘গত পরশু দিন বিনা কারণে বদরগঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবসায়ী জাইদুল হকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মোহাম্মদ আলী সরকারের লোকজন হামলা ও লুটপাট চালিয়ে ভাঙচুর করেন। ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সরোয়ার জাহানসহ আমরা বাধা দিতে গেলে মোহাম্মদ আলীর লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। ব্যবসায়ীর দোকান ভাঙচুর ও হামলার প্রতিবাদে আজকে সকল ব্যবসায়ী মিলে মানববন্ধন আয়োজন করি। এ সময় মোহাম্মদ আলী সরকারের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় আমাদের ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়েছে।’

বদরগঞ্জ পৌর বিএনপির সদস্যসচিব কমল লোহারি বলেন, ‘এটা দলীয় কোনো দ্বন্দ্ব নয়। মোহাম্মদ আলী সরকার ও মানিক চেয়ারম্যান তারা পূর্বে থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তেন। তারই প্রতিফলন আজকের এই সংঘর্ষ। আমরা চাই না বদরগঞ্জে এরকম কোনো ঘটনা ঘটুক। আজ তাদের কারণে বদরগঞ্জবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।’

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য আমরা মাঠেই রয়েছি।’

এ বিষয়ে যৌথ বাহিনীর ক্যাপ্টেন মেহেদী জানান, বদরগঞ্জ থানার সাথে যোগাযোগ করে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। আশা করি আর কোনো ঘটনা ঘটবে না।