মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরানকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র!

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:২০:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭৬ Time View

যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন ইরানের বিরুদ্ধে এক নতুন কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করেছে, যা বিশ্বাসঘাতকতার অনন্য নজির স্থাপন করেছে। ওমানে দুই দেশের মধ্যে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চলাকালীনই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের চারপাশে সামরিক ঘেরাটোপ তৈরি করেছে। শনিবার মাস্কটে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক চলার সময়ই খবর আসে যে মার্কিন বিমানবাহিনী ইরানের চারপাশে কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে।

ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়ায় ছয়টি বি-টু স্টিলথ বোমারু মোতায়েন করা হয়েছে, যা ইরানের পরমাণু স্থাপনার উপর হামলার ইঙ্গিতবাহী। পাশাপাশি ইসরাইলকে সুরক্ষা দিতে থার্ড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সরবরাহ করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস কার্ল ভিনসন পাঠানো হয়েছে, যাতে ৯০টি ফাইটার জেট ও হেলিকপ্টারসহ ৬০০০ নৌসেনা অবস্থান করছে।

লোহিত সাগরে ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান দীর্ঘদিন ধরে টহল দিচ্ছে। সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে কার্ল ভিনসন মালাক্কা প্রণালী পেরিয়ে ভারত মহাসাগরে প্রবেশ করেছে। এই রণতরীতে এফ-৩৫ ফাইটার জেট, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার এয়ারক্রাফট এবং বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। মার্কিন এক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা গোপনীয়তা বজায় রেখে জানান, ইরান উপকূলে এই বিমানবাহী রণতরী পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এই সবকিছু ঘটছে ঠিক সেই মুহূর্তে যখন পরমাণু চুক্তি পুনর্বহালের আলোচনা চলছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানকে সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেছেন, আলোচনায় বসতে না চাইলে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা চালানো হবে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিড স্পষ্ট করে বলেছেন, ইরানের সামনে এখন দুটি পথ খোলা আছে – হয় ট্রাম্পের শর্ত মেনে নেয়া নয়তো ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করা। তবে আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, আলোচনা বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে আবারও বৈঠক হবে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। এই পরিস্থিতি স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্র একইসাথে কূটনৈতিক ও সামরিক চাপ প্রয়োগ করে ইরানকে বশে আনতে চাইছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Farhan Shekh

জনপ্রিয়

ইরানকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র!

Update Time : ০৬:২০:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন ইরানের বিরুদ্ধে এক নতুন কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করেছে, যা বিশ্বাসঘাতকতার অনন্য নজির স্থাপন করেছে। ওমানে দুই দেশের মধ্যে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চলাকালীনই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের চারপাশে সামরিক ঘেরাটোপ তৈরি করেছে। শনিবার মাস্কটে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক চলার সময়ই খবর আসে যে মার্কিন বিমানবাহিনী ইরানের চারপাশে কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে।

ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়ায় ছয়টি বি-টু স্টিলথ বোমারু মোতায়েন করা হয়েছে, যা ইরানের পরমাণু স্থাপনার উপর হামলার ইঙ্গিতবাহী। পাশাপাশি ইসরাইলকে সুরক্ষা দিতে থার্ড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সরবরাহ করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস কার্ল ভিনসন পাঠানো হয়েছে, যাতে ৯০টি ফাইটার জেট ও হেলিকপ্টারসহ ৬০০০ নৌসেনা অবস্থান করছে।

লোহিত সাগরে ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান দীর্ঘদিন ধরে টহল দিচ্ছে। সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে কার্ল ভিনসন মালাক্কা প্রণালী পেরিয়ে ভারত মহাসাগরে প্রবেশ করেছে। এই রণতরীতে এফ-৩৫ ফাইটার জেট, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার এয়ারক্রাফট এবং বিভিন্ন ধরনের অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। মার্কিন এক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা গোপনীয়তা বজায় রেখে জানান, ইরান উপকূলে এই বিমানবাহী রণতরী পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এই সবকিছু ঘটছে ঠিক সেই মুহূর্তে যখন পরমাণু চুক্তি পুনর্বহালের আলোচনা চলছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানকে সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেছেন, আলোচনায় বসতে না চাইলে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা চালানো হবে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিড স্পষ্ট করে বলেছেন, ইরানের সামনে এখন দুটি পথ খোলা আছে – হয় ট্রাম্পের শর্ত মেনে নেয়া নয়তো ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করা। তবে আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, আলোচনা বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে আবারও বৈঠক হবে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। এই পরিস্থিতি স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্র একইসাথে কূটনৈতিক ও সামরিক চাপ প্রয়োগ করে ইরানকে বশে আনতে চাইছে।