
বগুড়া পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জনমত যাচাই ও আপত্তি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে রোববার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখা থেকে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
ফলে বাংলাদেশে নতুন সিটি কর্পোরেশন হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে বগুড়া। জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা স্বাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তিতে নাগরিকদের মতামত ও আপত্তি জানানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
বগুড়া পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মাসুম আলী বেগ জানান, গণবিজ্ঞপ্তি জারির পর এখন ৩০ দিনের মধ্যে কেউ চাইলে মতামত ও আপত্তি দিতে পারবে। আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য অতিরিক্ত ১৫ দিন সময় লাগবে। সব মিলিয়ে ৪৫ দিনের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১০ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়া পৌরসভা এলাকার ২১ টি ওয়ার্ডের মৌজাসমূহকে নিয়ে বগুড়া সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হলো। এ বিষয়ে কারও আপত্তি থাকলে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে জানানোর অনুরোধ করা হলো।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান হওয়ায় আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বগুড়াকে সিটি কর্পোরেশনের মর্যাদা দেয়নি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছায় এই উদ্যোগ নতুন করে গতি পেয়েছে। বগুড়া সিটি করপোরেশনের স্বীকৃতি পেলে এটি হবে দেশের ১৩তম সিটি করপোরেশন।
বগুড়া পৌরসভা ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮১ সালে পৌরসভাটি ‘ক’ শ্রেণীর মর্যাদা পায়। কালক্রমে এর আয়তন বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ৭৬ বর্গকিলোমিটার। এরপর ২০০৪ সালে বর্ধিত করে ৬৯ দশমিক ৫৬ বর্গকিলোমিটার করা হয়।
২১টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত বগুড়া পৌরসভা প্রায় ৭০ বর্গ কিলোমিটার। সিটি কর্পোরেশনের জন্য ন্যূনতম আয়তন হতে হয় কমপক্ষে ২৫ বর্গকিলোমিটার। বর্তমানে এর জনসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। দেশের অনেক সিটি কর্পোরেশনের তুলনায় এর আয়তনে অনেক বড়।
‘ক’ শ্রেণীর এই পৌরসভাটি আয়তন বড় হলেও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় অন্যান্য পৌরসভার মতই বরাদ্দ পেয়ে থাকে। বগুড়া পৌরসভার সর্বমোট সড়কের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার। এরমধ্যে পাকা রাস্তা আছে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার। কাঁচা রাস্তা ২৮৬.৬৮ কিলোমিটার। কাঁচা রাস্তাগুলোর অধিকাংশ পৌরসভার বর্ধিত এলাকায় রয়েছে।
গণবিজ্ঞপ্তি জারির ৪৫ দিন পর স্থানীয় জনগণের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে তা পাঠানো হবে মন্ত্রণালয়ে। ওই প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই শেষে অনুমোদনের জন্য এ প্রস্তাবনা পাঠানো হবে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে। তাদের সম্মতি সাপেক্ষে সীমানা নির্ধারণ করে বগুড়া সিটি করপোরেশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করবে স্থানীয় সরকার বিভাগ।