শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:১৫:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
  • ৯২ Time View

২০২৩ সালের সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

বুধবার (২১ মে) রাতে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩-এ নাগরিক সুরক্ষার প্রয়োজনীয় বিধান ছিল না, যার ফলে সেই আইন অপব্যবহার ও নিপীড়নের সুযোগ তৈরি করেছিল এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছিল। তাই ওই আইন বাতিল করে সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিত করা, অনলাইনে সংঘটিত অপরাধ শনাক্ত, প্রতিরোধ, দমন ও এসব অপরাধের বিচারসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের জন্য নতুন অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হলেও ওই আইনের ১৭,১৮,১৯,২০,২২,২৩,৩০,৩২ ও ৩৫ ধারাসমূহ বলবৎ রাখা হয়েছে।

এর আগে, গত ৬ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এ অধ্যাদেশে সাইবার নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাদেশে ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, নিষিদ্ধ করা হয়েছে অনলাইন জুয়া। এছাড়া অনলাইনে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌন হয়রানিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

অধ্যাদেশে আগের আইনের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকা সম্পর্কে বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি, কুৎসামূলক প্রচারণার দণ্ড, মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার সংক্রান্ত ধারাগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, এর অপরাধ ও দণ্ড, আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শন, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ প্রকাশ ইত্যাদি ধারাও বিলুপ্ত করা হয়েছে।

আগের আইনের কিছু কিছু ধারায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশে রাখা হয়েছে। ধর্মীয় বা জাতিগত বিষয়ে সহিংসতা, ঘৃণা ও বিদ্বেষ মূলক তথ্য প্রকাশ ইত্যাদির অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়টি পরিবর্তন এনে রাখা হয়েছে। মত প্রকাশের মামলা জামিনযোগ্য রাখা হয়েছে।

অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে যদি সাইবার অপরাধ করা হয় সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি সাইবার স্পেসে জুয়া খেলার জন্য কোনো পোর্টাল বা অ্যাপ বা ডিভাইস তৈরি করেন বা পরিচালনা করেন বা জুয়া খেলায় অংশগ্রহণ করেন বা খেলায় সহায়তা বা উৎসাহ প্রদান বা উৎসাহ প্রদানের জন্য বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণ এবং প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে প্রচার বা বিজ্ঞাপিত করেন তাহলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ড পেতে হবে।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Farhan Shekh

জনপ্রিয়

সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল

Update Time : ০১:১৫:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

২০২৩ সালের সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

বুধবার (২১ মে) রাতে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩-এ নাগরিক সুরক্ষার প্রয়োজনীয় বিধান ছিল না, যার ফলে সেই আইন অপব্যবহার ও নিপীড়নের সুযোগ তৈরি করেছিল এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছিল। তাই ওই আইন বাতিল করে সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিত করা, অনলাইনে সংঘটিত অপরাধ শনাক্ত, প্রতিরোধ, দমন ও এসব অপরাধের বিচারসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের জন্য নতুন অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হলেও ওই আইনের ১৭,১৮,১৯,২০,২২,২৩,৩০,৩২ ও ৩৫ ধারাসমূহ বলবৎ রাখা হয়েছে।

এর আগে, গত ৬ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এ অধ্যাদেশে সাইবার নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাদেশে ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, নিষিদ্ধ করা হয়েছে অনলাইন জুয়া। এছাড়া অনলাইনে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌন হয়রানিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

অধ্যাদেশে আগের আইনের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকা সম্পর্কে বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি, কুৎসামূলক প্রচারণার দণ্ড, মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার সংক্রান্ত ধারাগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, এর অপরাধ ও দণ্ড, আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শন, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ প্রকাশ ইত্যাদি ধারাও বিলুপ্ত করা হয়েছে।

আগের আইনের কিছু কিছু ধারায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশে রাখা হয়েছে। ধর্মীয় বা জাতিগত বিষয়ে সহিংসতা, ঘৃণা ও বিদ্বেষ মূলক তথ্য প্রকাশ ইত্যাদির অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়টি পরিবর্তন এনে রাখা হয়েছে। মত প্রকাশের মামলা জামিনযোগ্য রাখা হয়েছে।

অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে যদি সাইবার অপরাধ করা হয় সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি সাইবার স্পেসে জুয়া খেলার জন্য কোনো পোর্টাল বা অ্যাপ বা ডিভাইস তৈরি করেন বা পরিচালনা করেন বা জুয়া খেলায় অংশগ্রহণ করেন বা খেলায় সহায়তা বা উৎসাহ প্রদান বা উৎসাহ প্রদানের জন্য বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণ এবং প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে প্রচার বা বিজ্ঞাপিত করেন তাহলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ড পেতে হবে।