গাইবান্ধায় দিনব্যাপী প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী সফলভাবে অনুষ্ঠিত।
দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি—প্রাণিসম্পদে হবে উন্নতি এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বুধবার (২৬ নভেম্বর ২০২৫) গাইবান্ধা সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিভিল সার্জন মোঃ রফিকুজ্জামান। প্রদর্শনীর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার জনাব তরুণ কুমার দত্ত।
প্রদর্শনীতে ছিল মোট ৩০টি স্টল। এসব স্টলে দেশীয় ও উন্নত জাতের গরু, মহিষ, ছাগল, ঘোড়া, বড় জাতের হাঁস, মুরগি, কোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি প্রদর্শন করা হয়। পাশাপাশি আধুনিক পশুপালন, ডেইরি উন্নয়ন, খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও রোগ প্রতিরোধ বিষয়ে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার সরাসরি দেখানো হয়, যা কৃষক ও উদ্যোক্তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়তা করে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার জনাব তরুণ কুমার দত্ত বলেন,
“আমাদের মূল লক্ষ্য হলো খামারিদের দেশীয় প্রজাতি ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় সম্পর্কে সরাসরি ধারণা দেওয়া। তারা এখানে দেখতে পাচ্ছেন কীভাবে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রেখে দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়। আমরা চাই প্রতিটি খামারি আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়াক।”
দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষকেরা প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিখছেন কীভাবে দেশীয় গবাদিপশুকে উন্নত জাতের সঙ্গে সংকরায়ণ করা যায়। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে খামারে সঠিকভাবে ওষুধ প্রয়োগ, খাদ্য ব্যবস্থাপনা এবং রোগ প্রতিরোধের পদ্ধতি সম্পর্কে প্রত্যক্ষ শিক্ষা পাচ্ছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন,
“দেশীয় প্রজাতি ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় প্রাণিসম্পদ খাতে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এতে কৃষকের আয় যেমন বাড়বে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদে খাতটির উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে।”
অনুষ্ঠানটি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল, গাইবান্ধা সদর। পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি), প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে।
দিনব্যাপী প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীটি প্রমাণ করেছে যে দেশীয় জাত ও উন্নত প্রযুক্তির সমন্বিত প্রয়োগ কৃষক-খামারিদের জন্য কার্যকর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার দ্বার উন্মোচন করছে—যা ভবিষ্যতে প্রাণিসম্পদ খাতে নতুন সম্ভাবনার পথ তৈরি করবে।