বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় ৪৮ ঘণ্টায় ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা জাতিসংঘের

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:২৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
  • ৪৭ Time View

গাজা উপত্যকায় জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে না পারলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার শিশুর জীবনহানি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।

গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল টম ফ্লেচার বিবিসি রেডিও ফোর-এর ‘টুডে’ প্রোগ্রামে এ আশঙ্কার কথা জানান।

ফ্লেচার বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে জানি, শিশুদের জরুরি জীবন রক্ষাকারী খাবার প্রয়োজন। কারণ তাদের মায়েরা নিজেরাই পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছেন না। আর যদি তারা প্রয়োজনীয় পুষ্টি না পায়, তবে তারা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে।’

এই বিপুল শিশু মৃত্যুর আশঙ্কা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে টম ফ্লেচার বলেন, ‘আমাদের শক্তিশালী দল মাঠে কাজ করছে এবং দুর্ভাগ্যবশত তাদের অনেকেই নিহত হয়েছেন। তবে এখনও অনেক কর্মী মাঠে রয়েছেন, তারা মেডিকেল সেন্টার, স্কুলগুলোতে আছেন। তারা চাহিদা নিরূপণের চেষ্টা করছেন।’

টম ফ্লেচার বিবিসিকে রেডিও ফোরকে আরও বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা শক্ত ভাষায় যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। তারা পরিস্থিতিকে তুলে ধরেছে। তবে, জাতিসংঘ চায় বিশ্ব সংস্থাটিকে আরও সমর্থন দিক, যেন তারা ক্ষুধার্ত মানুষদের জন্য সাহায্য পাঠাতে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়াতে পারে।’

গাজার বর্তমান পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে টম ফ্লেচার বলেন, ‘এই ১৪ হাজার শিশুর মধ্যে যত বেশি সম্ভব, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমরা তাদের বাঁচাতে চাই। আমাদের গাজা উপত্যকাকে মানবিক সহায়তা দিয়ে ভাসিয়ে দিতে হবে। আমরা বাধাগ্রস্ত হব এবং বিশাল ঝুঁকি নেব। কিন্তু আমি এই শিশুর খাবার পৌঁছে দেওয়ার চেয়ে ভালো কোনো উপায় দেখছি না।’

এদিকে দীর্ঘ ৩ মাস পর গত সোমবার মাত্র পাঁচ ট্রাক খাদ্য সরবরাহের অনুমতি দিয়েছিল ইসরায়েল। আজ আরও ১০০ ট্রাক খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রবেশের আশা জাতিসংঘের।

এ প্রসঙ্গে টম ফ্লেচার বলছেন, ‘ইসরায়েল যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা যথেষ্ট নয়। আজ নয়টি ট্রাক কেরেম শালম ক্রসিং দিয়ে গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু এটি সাগরে এক বিন্দু পানির মতো। তাই আরও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ত্রাণ গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘লুটপাট কমাতে ত্রাণের নিয়মিত প্রবাহ থাকতে হবে। মানবিক কর্মীদের একাধিক রুটে সেখানে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে। মানবিক সহায়তার পাশাপাশি বাণিজ্যিক পণ্যসামগ্রী যেতে দিতে হবে।’

এদিকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার পরিবারগুলো প্রয়োজনীয় খাবার না থাকায় পশুখাদ্য, মেয়াদোত্তীর্ণ ও বালি মিশ্রিত আটা খেতে শুরু করেছে। অন্যদিকে শিশুরা ক্ষুধাজনিত কারণে ডায়রিয়া ও পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Farhan Shekh

জনপ্রিয়

গাজায় ৪৮ ঘণ্টায় ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা জাতিসংঘের

Update Time : ০৫:২৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

গাজা উপত্যকায় জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে না পারলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার শিশুর জীবনহানি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।

গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল টম ফ্লেচার বিবিসি রেডিও ফোর-এর ‘টুডে’ প্রোগ্রামে এ আশঙ্কার কথা জানান।

ফ্লেচার বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে জানি, শিশুদের জরুরি জীবন রক্ষাকারী খাবার প্রয়োজন। কারণ তাদের মায়েরা নিজেরাই পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছেন না। আর যদি তারা প্রয়োজনীয় পুষ্টি না পায়, তবে তারা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে।’

এই বিপুল শিশু মৃত্যুর আশঙ্কা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে টম ফ্লেচার বলেন, ‘আমাদের শক্তিশালী দল মাঠে কাজ করছে এবং দুর্ভাগ্যবশত তাদের অনেকেই নিহত হয়েছেন। তবে এখনও অনেক কর্মী মাঠে রয়েছেন, তারা মেডিকেল সেন্টার, স্কুলগুলোতে আছেন। তারা চাহিদা নিরূপণের চেষ্টা করছেন।’

টম ফ্লেচার বিবিসিকে রেডিও ফোরকে আরও বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা শক্ত ভাষায় যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। তারা পরিস্থিতিকে তুলে ধরেছে। তবে, জাতিসংঘ চায় বিশ্ব সংস্থাটিকে আরও সমর্থন দিক, যেন তারা ক্ষুধার্ত মানুষদের জন্য সাহায্য পাঠাতে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়াতে পারে।’

গাজার বর্তমান পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে টম ফ্লেচার বলেন, ‘এই ১৪ হাজার শিশুর মধ্যে যত বেশি সম্ভব, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমরা তাদের বাঁচাতে চাই। আমাদের গাজা উপত্যকাকে মানবিক সহায়তা দিয়ে ভাসিয়ে দিতে হবে। আমরা বাধাগ্রস্ত হব এবং বিশাল ঝুঁকি নেব। কিন্তু আমি এই শিশুর খাবার পৌঁছে দেওয়ার চেয়ে ভালো কোনো উপায় দেখছি না।’

এদিকে দীর্ঘ ৩ মাস পর গত সোমবার মাত্র পাঁচ ট্রাক খাদ্য সরবরাহের অনুমতি দিয়েছিল ইসরায়েল। আজ আরও ১০০ ট্রাক খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রবেশের আশা জাতিসংঘের।

এ প্রসঙ্গে টম ফ্লেচার বলছেন, ‘ইসরায়েল যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা যথেষ্ট নয়। আজ নয়টি ট্রাক কেরেম শালম ক্রসিং দিয়ে গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু এটি সাগরে এক বিন্দু পানির মতো। তাই আরও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ত্রাণ গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘লুটপাট কমাতে ত্রাণের নিয়মিত প্রবাহ থাকতে হবে। মানবিক কর্মীদের একাধিক রুটে সেখানে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে। মানবিক সহায়তার পাশাপাশি বাণিজ্যিক পণ্যসামগ্রী যেতে দিতে হবে।’

এদিকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার পরিবারগুলো প্রয়োজনীয় খাবার না থাকায় পশুখাদ্য, মেয়াদোত্তীর্ণ ও বালি মিশ্রিত আটা খেতে শুরু করেছে। অন্যদিকে শিশুরা ক্ষুধাজনিত কারণে ডায়রিয়া ও পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।