জাতীয়করণের দাবিতে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের আন্দোলনে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। পাশাপাশি জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে। রবিবার (২৬ জানুয়ারি) শাহবাগে মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের ঘোষণাসহ ছয় দফা দাবিতে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেয় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক ঐক্যজোট। অবস্থান কর্মসূচি থেকে স্মারকলিপি দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা করেন । এরপর প্রেস ক্লাব থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ করে। পরে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো হলো—
১। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা নিবন্ধন স্থগিতাদেশ ২০০৮ প্রত্যাহার করা।
২। রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত কোডবিহীন মাদরাসাগুলো মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক কোড নম্বরে অন্তর্ভুক্তকরণ।
৩। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার আলাদা নীতিমালা।
৪। পাঠদানের অনুমতি, স্বীকৃতি, বেতন-ভাতা, নীতিমালা-২০২৫ অনুমোদন।
৫। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো অফিস সহায়ক নিয়োগের ব্যবস্থা নেওয়া।
৬। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসায় প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি খোলার অনুমোদনের ব্যবস্থা নেওয়া।
এর আগে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিষ্ট্রেশনপ্রাপ্ত সকল ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ঐক্যজোট আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটি।
গতকাল শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোটের সদস্য সচিব মোহাম্মাদ আল-আমিন।
তিনি বলেন, আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির ৬ষ্ঠ দিনের অবস্থান ধর্মঘট চলছে। স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে আমাদের মাদ্রাসার সাধারন শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করেছে। সত্যিকার অর্থে বৈষম্যমুক্ত করতে চাইলে আমাদের দাবি মেনে নিন। নয়তো যেসব ছাত্র জনতা রাজপথে রক্ত দিয়েছে, আহত হয়েছে, জীবন দিয়েছে, তাদের সাথে বেঈমানি করা হবে। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের মাধ্যমে দাবি আদায় না হলে অনশনে বসার ঘোষণাও দেন তিনি।
আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শামসুল আলম লিখিত বক্তব্যে বলেন, ১৯৮৪ সালে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাকে রেজিষ্ট্রেশন দেওয়া হয়। ১৯৯৪ সালে একই পরিপত্রে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের ৫০০ টাকা সরকারি অনুদান দেওয়া হয়। ২০১৩ সালে ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হলেও ১ হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ী মাদ্রাসার ব্যাপারে ৩ হাজার ৩০০ টাকা অনুদান দেওয়া ব্যতীত এমপিওভুক্তও করা হয়নি। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে এলেও কোনো সুযোগ-সুবিধা পাইনি।