শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের পাঠ্যবইয়ে মানচিত্র ও তথ্য নিয়ে চীনের আপত্তি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৪৫:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৭৮ Time View

বাংলাদেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের দুটি পাঠ্যবই বই ও জরিপ অধিদফতরের ওয়েবসাইটে এশিয়ার মানচিত্রে অরুণাচল ও‘আকসাই চীন’কে ভুলভাবে ভারতের অংশে দেখানো হয়েছে। চীন বলছে,  এগুলো অরুণাচল ও কাশ্মীর নয়, এটি ‘জ্যাংনান’ এবং ‘আকসাই চীন’, যা চীনের অংশ।

বাংলাদেশের এ ক্ষেত্রে তথ্য বিভ্রাট হয়েছে দাবি করে চিঠি দিয়েছে দেশটি। এছাড়া হংকং ও তাইওয়ানকে চীনের অংশ না দেখিয়ে আলাদা করে বাণিজ্যের বিষয়টি উল্লেখ করায় সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বেইজিং।

বাংলাদেশের জরিপ অধিদফতরের মানচিত্রের পাশাপাশি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এবং স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ভুল তথ্য নিয়ে চীন ও ভারত সীমান্ত ইস্যুতে গত নভেম্বরের শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকাকে জানায় বেইজিং।

দেশটি বলছে, মানচিত্রে অরুণাচলের অংশকে ভারতের দেখানো হয়েছে, তা চীনের জ্যাংনান। আর কাশ্মীরের যে অংশটিকে ভারতের দেখানো হয়েছে, তা জিংজিয়াং প্রদেশের আকসাই চীন। যা দীর্ঘদিন ধরে চীনের দখলে রয়েছে। ‘জ্যাংনান’ এবং ‘আকসাই চীন’ বহু বছর ধরেই চীনের অংশ– এমন দাবি করে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে বেইজিং।

এর পাশাপাশি নবম শ্রেণির বইয়ে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য-সংক্রান্ত বিষয়ে হংকং এবং তাইওয়ানের সঙ্গে বাণিজ্য আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে চীন একই চিঠিতে বলেছে, হংকং ও তাইওয়ান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

এই বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, পাঠ্যবইয়ে কিছু লেখা ও মানচিত্র নিয়ে চীনের আপত্তি ছিল। এ নিয়ে একাধিকবার ঢাকার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে দেশটি। চীনের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। তবে তারা এমন সময় বিষয়টি জানিয়েছে, ততদিনে নতুন বই ছাপার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেছে। আগামীতে বিষয়গুলোকে আমলে নেওয়া হবে বলে তাদের জানানো হয়েছে। বেইজিং ঢাকাকে প্রতিশ্রুত ‘এক চীন নীতি’ বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে এতে অটল থাকতে আহ্বান জানিয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে পাঠ্যবইয়ে এগুলো এভাবেই ছাপা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের আগে এ বিষয়গুলো নিয়ে কখনও আপত্তি তোলেনি চীন। তবে শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে বিষয়টি সামনে এনেছে। আর এসব বই এতদিন ভারতেই ছাপা হতো।

এ বিষয়ে ঢাকার চীনের দূতাবাসের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, চীন ও ভারতের সীমান্ত কখনোই মীমাংসিত হয়নি। জ্যাংনান সব সময়ই চীনের অংশ ছিল, যা একটি অনস্বীকার্য মৌলিক সত্য। তাই চীনের ভূখণ্ডে তথাকথিত ‘অরুণাচল প্রদেশ’ স্থাপন করা অবৈধ।

এদিকে জ্যাংনান নিয়ে চীনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, এটি প্রথম নয়, চীন এমন চেষ্টা অনেক দিন ধরে করছে। চীনের দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে ভারত। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে ও থাকবে।

এই বিষয়ে পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন ও সংশোধন কমিটির অন্যতম সদস্য রাখাল রাহা বলেন, এই ধরনের অভিযোগ আমরা কয়েকমাস আগে পেয়েছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Tavir Rahman

জনপ্রিয়

ব্যাংকক গেছেন আবদুল হামিদ ইমিগ্রেশনের অতিরিক্ত এসপি প্রত্যাহার, তদন্ত কর্মকর্তা বরখাস্ত

বাংলাদেশের পাঠ্যবইয়ে মানচিত্র ও তথ্য নিয়ে চীনের আপত্তি

Update Time : ০৭:৪৫:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের দুটি পাঠ্যবই বই ও জরিপ অধিদফতরের ওয়েবসাইটে এশিয়ার মানচিত্রে অরুণাচল ও‘আকসাই চীন’কে ভুলভাবে ভারতের অংশে দেখানো হয়েছে। চীন বলছে,  এগুলো অরুণাচল ও কাশ্মীর নয়, এটি ‘জ্যাংনান’ এবং ‘আকসাই চীন’, যা চীনের অংশ।

বাংলাদেশের এ ক্ষেত্রে তথ্য বিভ্রাট হয়েছে দাবি করে চিঠি দিয়েছে দেশটি। এছাড়া হংকং ও তাইওয়ানকে চীনের অংশ না দেখিয়ে আলাদা করে বাণিজ্যের বিষয়টি উল্লেখ করায় সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বেইজিং।

বাংলাদেশের জরিপ অধিদফতরের মানচিত্রের পাশাপাশি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এবং স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ভুল তথ্য নিয়ে চীন ও ভারত সীমান্ত ইস্যুতে গত নভেম্বরের শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকাকে জানায় বেইজিং।

দেশটি বলছে, মানচিত্রে অরুণাচলের অংশকে ভারতের দেখানো হয়েছে, তা চীনের জ্যাংনান। আর কাশ্মীরের যে অংশটিকে ভারতের দেখানো হয়েছে, তা জিংজিয়াং প্রদেশের আকসাই চীন। যা দীর্ঘদিন ধরে চীনের দখলে রয়েছে। ‘জ্যাংনান’ এবং ‘আকসাই চীন’ বহু বছর ধরেই চীনের অংশ– এমন দাবি করে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে বেইজিং।

এর পাশাপাশি নবম শ্রেণির বইয়ে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য-সংক্রান্ত বিষয়ে হংকং এবং তাইওয়ানের সঙ্গে বাণিজ্য আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে চীন একই চিঠিতে বলেছে, হংকং ও তাইওয়ান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

এই বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, পাঠ্যবইয়ে কিছু লেখা ও মানচিত্র নিয়ে চীনের আপত্তি ছিল। এ নিয়ে একাধিকবার ঢাকার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে দেশটি। চীনের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। তবে তারা এমন সময় বিষয়টি জানিয়েছে, ততদিনে নতুন বই ছাপার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেছে। আগামীতে বিষয়গুলোকে আমলে নেওয়া হবে বলে তাদের জানানো হয়েছে। বেইজিং ঢাকাকে প্রতিশ্রুত ‘এক চীন নীতি’ বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে এতে অটল থাকতে আহ্বান জানিয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে পাঠ্যবইয়ে এগুলো এভাবেই ছাপা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের আগে এ বিষয়গুলো নিয়ে কখনও আপত্তি তোলেনি চীন। তবে শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে বিষয়টি সামনে এনেছে। আর এসব বই এতদিন ভারতেই ছাপা হতো।

এ বিষয়ে ঢাকার চীনের দূতাবাসের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, চীন ও ভারতের সীমান্ত কখনোই মীমাংসিত হয়নি। জ্যাংনান সব সময়ই চীনের অংশ ছিল, যা একটি অনস্বীকার্য মৌলিক সত্য। তাই চীনের ভূখণ্ডে তথাকথিত ‘অরুণাচল প্রদেশ’ স্থাপন করা অবৈধ।

এদিকে জ্যাংনান নিয়ে চীনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, এটি প্রথম নয়, চীন এমন চেষ্টা অনেক দিন ধরে করছে। চীনের দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে ভারত। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে ও থাকবে।

এই বিষয়ে পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন ও সংশোধন কমিটির অন্যতম সদস্য রাখাল রাহা বলেন, এই ধরনের অভিযোগ আমরা কয়েকমাস আগে পেয়েছি।