তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীনকে দুই বছর সময় দেওয়া হচ্ছে

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:57:35 am, Tuesday, 11 February 2025
  • 59 Time View

অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য চীনকে দুই বছরের সময় দিতে সম্মত হয়েছি দুটি শর্তে। আপাতত ৪৫ কিলোমিটারে ভাঙন রোধে বাঁধের জন্য টেন্ডার দেওয়া হবে।

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রংপুরের কাউনিয়ার তিস্তা সড়ক সেতুর পাশে তিস্তা নিয়ে করণীয় শীর্ষক শুনানিতে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আন্তর্জাতিক নদী কোনো দেশ যদি মনে করে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ব্যবহার করব, এটা আন্তর্জাতিক বিধি-নীতি সমর্থন করে না। চীন সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে, আমরা চীনের সঙ্গে একটা চুক্তি করেছি। এখানে দুটি ব্যাপার আছে- এক তিস্তার ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে আমাদের পানি বণ্টন। এটা আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে আমরা ভারতকে বার বার বলব, তিস্তা যদি বানের পানিতে আসে, এ নদীটার প্রকৃতিতে এমন হঠাৎ করে পানি চলে আসে। কিন্তু আমাদের যদি সময়মতো জানানো হয়, তাহলে তো আমরা ক্ষয়ক্ষতিটা কমাতে পারি।

তিনি বলেন, একদিকে আমাদের চুক্তি, আরেকদিকে আমাদের যেন সময়মতো জানানো হয়। গেট খোলার আগে কয়েক ঘণ্টা সময় দিলে অনেক মানুষকে সরিয়ে নিতে পারি। গরু ছাগলগুলা সরিয়ে নিতে পারি। ভারতের তো এটা আমাদের না জানানোর কোনো কারণ নেই। তাহলে কেমন ভালো বন্ধু কেমন প্রতিবেশী? একটা বন্ধুত্বের পরিচয় হবে কাজ দিয়ে। এটা আমাদের দাবি থাকতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, ২০১৬ সালে চুক্তিটা স্বাক্ষর হয়েছিল মহাপরিকল্পনার জন্য। সেই চুক্তি অনুযায়ী চীন কিন্তু একটা প্রকল্প দিয়েছে। মহাপরিকল্পনার দিয়েছে। ওইটা যখন আবার চায়না সরকারকে পাঠানো হয়, তারা দেখল যেভাবে প্রস্তাবনা করা হয়েছে, সেটি টেকসই হবে না। এখন চীন আবার আমাদের কাছে দুই বছর সময় চাচ্ছে। আমরা তাদের দুই বছর সময় দিতে রাজি হয়েছি। কিন্তু দুটি শর্তে। একটা হলো কি থাকবে আর কি থাকবে না। এটার ব্যাপারে তিস্তা পাড়ের মানুষের মতামত শুনতে হবে। ওইটা শোনার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড -পাওয়ার চীনের এ প্রকল্প সঙ্গে নিয়ে আপনাদের মতামত শুনবে। পরিকল্পনাটা ২০২৫ এর ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত করতে হবে। আপনাদের মতামত ছাড়া মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে না।

তিনি বলেন, আপনাদের এ তিস্তার ৪৫ কিলোমিটারের ভাঙনের মধ্যে ২০ কিলোমিটারে বেশি ভাঙন হয়। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আজ নির্দেশ দিয়েছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো এলাকাটা একটি টেন্ডার করবে। এবং এ সপ্তাহের মধ্যে তৈরি করবে। শোনেন সরকারের টাকা তো আমার পকেটে থাকে না। এটা আগে একটা পরিকল্পনা করতে হয় একটা ডিজাইন করতে হয়। অনেক লম্বা সময় ধরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় হয়ে সেটি পাস হয়। আমরা সেদিকে যাব না। আমরা একটা টেন্ডার কল করে মার্চ মাসের মাঝামাঝি কাজ শুরু করে দেব।

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সব কিছু আমাদের হাতে নেই। শুধু ভারত বা অন্য দেশে না, আন্তর্জাতিক মহলেও চেষ্টা করব।

গণশুনানিতে বক্তব্য দেন-স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়ক মন্ত্রনালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য দেন- স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন অতিরিক্ত সচিব একেএম তারিকুল আলম, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ অনেকে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Tavir Rahman

Popular Post

ব্রীজ রোড যুব সমাজের উদ্যােগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীনকে দুই বছর সময় দেওয়া হচ্ছে

Update Time : 05:57:35 am, Tuesday, 11 February 2025

অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য চীনকে দুই বছরের সময় দিতে সম্মত হয়েছি দুটি শর্তে। আপাতত ৪৫ কিলোমিটারে ভাঙন রোধে বাঁধের জন্য টেন্ডার দেওয়া হবে।

রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রংপুরের কাউনিয়ার তিস্তা সড়ক সেতুর পাশে তিস্তা নিয়ে করণীয় শীর্ষক শুনানিতে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আন্তর্জাতিক নদী কোনো দেশ যদি মনে করে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ব্যবহার করব, এটা আন্তর্জাতিক বিধি-নীতি সমর্থন করে না। চীন সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে, আমরা চীনের সঙ্গে একটা চুক্তি করেছি। এখানে দুটি ব্যাপার আছে- এক তিস্তার ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে আমাদের পানি বণ্টন। এটা আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে আমরা ভারতকে বার বার বলব, তিস্তা যদি বানের পানিতে আসে, এ নদীটার প্রকৃতিতে এমন হঠাৎ করে পানি চলে আসে। কিন্তু আমাদের যদি সময়মতো জানানো হয়, তাহলে তো আমরা ক্ষয়ক্ষতিটা কমাতে পারি।

তিনি বলেন, একদিকে আমাদের চুক্তি, আরেকদিকে আমাদের যেন সময়মতো জানানো হয়। গেট খোলার আগে কয়েক ঘণ্টা সময় দিলে অনেক মানুষকে সরিয়ে নিতে পারি। গরু ছাগলগুলা সরিয়ে নিতে পারি। ভারতের তো এটা আমাদের না জানানোর কোনো কারণ নেই। তাহলে কেমন ভালো বন্ধু কেমন প্রতিবেশী? একটা বন্ধুত্বের পরিচয় হবে কাজ দিয়ে। এটা আমাদের দাবি থাকতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, ২০১৬ সালে চুক্তিটা স্বাক্ষর হয়েছিল মহাপরিকল্পনার জন্য। সেই চুক্তি অনুযায়ী চীন কিন্তু একটা প্রকল্প দিয়েছে। মহাপরিকল্পনার দিয়েছে। ওইটা যখন আবার চায়না সরকারকে পাঠানো হয়, তারা দেখল যেভাবে প্রস্তাবনা করা হয়েছে, সেটি টেকসই হবে না। এখন চীন আবার আমাদের কাছে দুই বছর সময় চাচ্ছে। আমরা তাদের দুই বছর সময় দিতে রাজি হয়েছি। কিন্তু দুটি শর্তে। একটা হলো কি থাকবে আর কি থাকবে না। এটার ব্যাপারে তিস্তা পাড়ের মানুষের মতামত শুনতে হবে। ওইটা শোনার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড -পাওয়ার চীনের এ প্রকল্প সঙ্গে নিয়ে আপনাদের মতামত শুনবে। পরিকল্পনাটা ২০২৫ এর ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত করতে হবে। আপনাদের মতামত ছাড়া মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে না।

তিনি বলেন, আপনাদের এ তিস্তার ৪৫ কিলোমিটারের ভাঙনের মধ্যে ২০ কিলোমিটারে বেশি ভাঙন হয়। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আজ নির্দেশ দিয়েছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো এলাকাটা একটি টেন্ডার করবে। এবং এ সপ্তাহের মধ্যে তৈরি করবে। শোনেন সরকারের টাকা তো আমার পকেটে থাকে না। এটা আগে একটা পরিকল্পনা করতে হয় একটা ডিজাইন করতে হয়। অনেক লম্বা সময় ধরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় হয়ে সেটি পাস হয়। আমরা সেদিকে যাব না। আমরা একটা টেন্ডার কল করে মার্চ মাসের মাঝামাঝি কাজ শুরু করে দেব।

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সব কিছু আমাদের হাতে নেই। শুধু ভারত বা অন্য দেশে না, আন্তর্জাতিক মহলেও চেষ্টা করব।

গণশুনানিতে বক্তব্য দেন-স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়ক মন্ত্রনালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য দেন- স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন অতিরিক্ত সচিব একেএম তারিকুল আলম, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেনসহ অনেকে।