বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে গৃহবধূকে রাতভর গণধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:24:38 am, Sunday, 9 February 2025
  • 226 Time View

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের মোহাম্মদপুকুর গ্রামে গভীর নলকূপের ঘরে নিয়ে এক গৃহবধূকে রাতভর পালাক্রমে গণধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মোহাম্মদপুকুর গ্রামের রুবেল হোসেন (৩৩), ফারুক হোসেন (৪০) এবং রামশালা গ্রামের একরামুল হক (৪২)।

গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ জয়পুরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (টিটিসি) বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতির জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। প্রশিক্ষণ চলাকালে অভিযুক্ত রুবেল হোসেনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ঘটনার দিন প্রশিক্ষণ শেষে রুবেল কৌশলে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে মোটরসাইকেলে তুলে নেন।

পথে মোহাম্মদপুকুর গ্রামের ফারুক হোসেনের গভীর নলকূপের ঘরে নিয়ে রুবেল, ফারুক এবং একরামুল হক মিলে গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে গৃহবধূ জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ওই অবস্থায় রেখে পালিয়ে যান অভিযুক্তরা।

বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি গৃহবধু তার স্বামীকে জানান। অসুস্থ্য অবস্থায় গৃহবধুর স্বামী চিকিৎসার জন্য তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। এরপর গত শুক্রবার রাতে আক্কেলপুর থানায় এসে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গণর্ধষণের অভিযোগ তুলে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজন আসামীকে গ্রেপ্তার করে।

জানতে চাইলে থানায় মামলার এক নম্বর আসামি রুবেল হোসেন ধর্ষণের কথা স্বীকার করে বলেন, ওই গৃহবধু নিজ ইচ্ছায় আমাদের কাছে এসেছিলেন। সে তার কিস্তির টাকার জন্য চুক্তিতে এসেছিলেন। আমরা জোরপূর্বক কোনো কিছু করিনি। পরে তার স্বামীকে দিয়ে থানায় মামলা দায়ের করে আমাদের ফাঁসিয়েছেন।

ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, বিদেশ যাওয়ার জন্য আমার স্ত্রীকে জয়পুরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ (টিটিসি) কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি করিয়েছিলাম। সেখানে মামলার এক নম্বর আসামিও প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। সে আমার স্ত্রীকে তার মোটরসাইকেলে তুলে বাড়ি পৌছে দেওয়ার কথা বলে দুই নম্বর আসামির গভীর নলকুপে নিয়ে গিয়ে সর্বনাশ করে। একপর্যায়ে আমার স্ত্রী জ্ঞান হাড়িয়ে ফেললে তারা স্ত্রীকে ওই ঘরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরের দিন সকালে গুরুতর অসুস্থ্ অবস্থায় ওই গভীর নলকুপের ঘর থেকে বের হয়ে ঘটনাটি আমাকে খুলে বলে। তখন আমি স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে থানায় মামলা দায়ের করি। আশা করি ন্যায়বিচার পাবো।

আক্কেলপুর থানার পরিদর্শক (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় ভর্তি করিয়েছেন তার স্বামী। সেখানে তার আইনি সব পরীক্ষা হবে। ওই গৃহবধুর স্বামী বাদি হয়ে শুক্রবার রাতে থানায় তিন জনকে আসামী করে একটি এজাহার দেন। এরপর বিষয়টি তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পেলে ওই এজাহার মামলা হিসেবে নিয়ে অভিযান চালিয়ে তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে আজ (শনিবার) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Tavir Rahman

Popular Post

মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর চাঁদা দাবি, না পেয়ে হত্যা

বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে গৃহবধূকে রাতভর গণধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩

Update Time : 05:24:38 am, Sunday, 9 February 2025

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের মোহাম্মদপুকুর গ্রামে গভীর নলকূপের ঘরে নিয়ে এক গৃহবধূকে রাতভর পালাক্রমে গণধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মোহাম্মদপুকুর গ্রামের রুবেল হোসেন (৩৩), ফারুক হোসেন (৪০) এবং রামশালা গ্রামের একরামুল হক (৪২)।

গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ জয়পুরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (টিটিসি) বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতির জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। প্রশিক্ষণ চলাকালে অভিযুক্ত রুবেল হোসেনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ঘটনার দিন প্রশিক্ষণ শেষে রুবেল কৌশলে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে মোটরসাইকেলে তুলে নেন।

পথে মোহাম্মদপুকুর গ্রামের ফারুক হোসেনের গভীর নলকূপের ঘরে নিয়ে রুবেল, ফারুক এবং একরামুল হক মিলে গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে গৃহবধূ জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ওই অবস্থায় রেখে পালিয়ে যান অভিযুক্তরা।

বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি গৃহবধু তার স্বামীকে জানান। অসুস্থ্য অবস্থায় গৃহবধুর স্বামী চিকিৎসার জন্য তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। এরপর গত শুক্রবার রাতে আক্কেলপুর থানায় এসে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গণর্ধষণের অভিযোগ তুলে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজন আসামীকে গ্রেপ্তার করে।

জানতে চাইলে থানায় মামলার এক নম্বর আসামি রুবেল হোসেন ধর্ষণের কথা স্বীকার করে বলেন, ওই গৃহবধু নিজ ইচ্ছায় আমাদের কাছে এসেছিলেন। সে তার কিস্তির টাকার জন্য চুক্তিতে এসেছিলেন। আমরা জোরপূর্বক কোনো কিছু করিনি। পরে তার স্বামীকে দিয়ে থানায় মামলা দায়ের করে আমাদের ফাঁসিয়েছেন।

ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, বিদেশ যাওয়ার জন্য আমার স্ত্রীকে জয়পুরহাট কারিগরি প্রশিক্ষণ (টিটিসি) কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি করিয়েছিলাম। সেখানে মামলার এক নম্বর আসামিও প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। সে আমার স্ত্রীকে তার মোটরসাইকেলে তুলে বাড়ি পৌছে দেওয়ার কথা বলে দুই নম্বর আসামির গভীর নলকুপে নিয়ে গিয়ে সর্বনাশ করে। একপর্যায়ে আমার স্ত্রী জ্ঞান হাড়িয়ে ফেললে তারা স্ত্রীকে ওই ঘরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরের দিন সকালে গুরুতর অসুস্থ্ অবস্থায় ওই গভীর নলকুপের ঘর থেকে বের হয়ে ঘটনাটি আমাকে খুলে বলে। তখন আমি স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে থানায় মামলা দায়ের করি। আশা করি ন্যায়বিচার পাবো।

আক্কেলপুর থানার পরিদর্শক (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় ভর্তি করিয়েছেন তার স্বামী। সেখানে তার আইনি সব পরীক্ষা হবে। ওই গৃহবধুর স্বামী বাদি হয়ে শুক্রবার রাতে থানায় তিন জনকে আসামী করে একটি এজাহার দেন। এরপর বিষয়টি তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পেলে ওই এজাহার মামলা হিসেবে নিয়ে অভিযান চালিয়ে তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে আজ (শনিবার) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।