রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৯ মাসের সন্তানকে বাড়িতে রেখে ট্রেন চালাচ্ছেন ফরিদা

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:০৩:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৯৪ Time View

ট্রেনের ছন্দময় গতিতে ছুটে চলা জীবন, আর সেই গতিকে পরিচালনার দায়িত্ব এক নারীর হাতে। লালমনিরহাট রেল বিভাগে একমাত্র নারী ট্রেনচালক (এলএম) হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন নানা প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে। ৪ সন্তানের জননী ফরিদা আক্তার মাত্র ৯ মাসের বাচ্চাকে বাড়িতে রেখে ট্রেন চালাচ্ছেন। তার সাহসিকতা আর আত্মবিশ্বাসে মুগ্ধ রেল বিভাগ।

ট্রেনচালক ফরিদা আক্তারের স্বামী টুটুলকে নিয়ে লালমনিরহাট রেলস্টেশনের সরকারি কোয়ার্টারে বসবাস করেন। তাদের দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। টুটুল লালমনিরহাটে বেসরকারি চাকরি করেন।

৯ মাসের সন্তানকে বাড়িতে রেখে ট্রেন চালাচ্ছেন ফরিদা

ট্রেনচালক ফরিদা আক্তার বলেন, চ্যালেঞ্জ হিসেবে এই কাজটি আমি বেছে নিয়েছি। ছোট থেকে ইচ্ছা ছিল চ্যালেঞ্জিং পেশায় যাবো। ২০১৪ সালে ট্রেনচালক হিসেবে রেল বিভাগে যুক্ত হই। পরিবার যদি সাপোর্ট না করে তাহলে আপনি এ পেশায় আসতে পারবেন না। পাশাপাশি একজন পুরুষ ট্রেনচালকের সাপোর্ট প্রয়োজন রয়েছে। একজন নারী ট্রেনচালক হিসেবে সমাজে কে কী বললো সেটা দেখার বিষয় না। নারী হিসেবে যারা আমাকে ট্রেনচালকের সুযোগ করে দিয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।

তিনি আরও বলেন, আমার দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। সবচেয়ে ছোট ৯ মাসের মেয়েকে রেখে আমি ট্রেন চালাতে আসি। কাজে বের হলেও তারা কোনোদিন বিরক্ত হয় না।

৯ মাসের সন্তানকে বাড়িতে রেখে ট্রেন চালাচ্ছেন ফরিদা

লালমনিরহাট রেল স্টেশনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন ফরিদা আক্তার। চার সন্তানের মা হয়েও তিনি বেছে নিয়েছেন ট্রেন চালানোর মতো চ্যালেঞ্জিং পেশা। প্রথমে ভয় পেলেও এখন ট্রেনের স্টেশন থেকে স্টেশনে ছুটে চলার এই কাজটিকে ভালোবেসে ফেলেছেন। ২০১৪ সালে চাকরিতে যোগদান করে চাকরি জীবনের প্রায় ১০ বছর শেষ করেছেন।

ট্রেনচালক ফরিদা আক্তার নারী হওয়ায় তাকে প্রতিনিয়ত নানান সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু কখনো দমে যাননি ফরিদা। ট্রেনের যান্ত্রিক ত্রুটি হলে, নিজেই তা সমাধানের সাহস দেখান তিনি। তার এই সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বে মুগ্ধ রেল কর্তৃপক্ষ।

৯ মাসের সন্তানকে বাড়িতে রেখে ট্রেন চালাচ্ছেন ফরিদা

লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় লোকো ইনচার্জ কাজী সুমন বলেন, নারীরা এখন আর ঘরের মধ্যে বন্দি নেই। তারা সমাজের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। নারী চালকদের কাজে কোনো গাফিলতি নেই। ফরিদার মতো নারীরা দেখিয়ে দিচ্ছেন, কোনো পেশায় নারীদের জন্য অসম্ভব না। সাহস, অধ্যবসায় আর আত্মবিশ্বাস থাকলে প্রতিটি বাধা জয় করা সম্ভব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Tavir Rahman

জনপ্রিয়

৯ মাসের সন্তানকে বাড়িতে রেখে ট্রেন চালাচ্ছেন ফরিদা

Update Time : ১২:০৩:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ট্রেনের ছন্দময় গতিতে ছুটে চলা জীবন, আর সেই গতিকে পরিচালনার দায়িত্ব এক নারীর হাতে। লালমনিরহাট রেল বিভাগে একমাত্র নারী ট্রেনচালক (এলএম) হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন নানা প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে। ৪ সন্তানের জননী ফরিদা আক্তার মাত্র ৯ মাসের বাচ্চাকে বাড়িতে রেখে ট্রেন চালাচ্ছেন। তার সাহসিকতা আর আত্মবিশ্বাসে মুগ্ধ রেল বিভাগ।

ট্রেনচালক ফরিদা আক্তারের স্বামী টুটুলকে নিয়ে লালমনিরহাট রেলস্টেশনের সরকারি কোয়ার্টারে বসবাস করেন। তাদের দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। টুটুল লালমনিরহাটে বেসরকারি চাকরি করেন।

৯ মাসের সন্তানকে বাড়িতে রেখে ট্রেন চালাচ্ছেন ফরিদা

ট্রেনচালক ফরিদা আক্তার বলেন, চ্যালেঞ্জ হিসেবে এই কাজটি আমি বেছে নিয়েছি। ছোট থেকে ইচ্ছা ছিল চ্যালেঞ্জিং পেশায় যাবো। ২০১৪ সালে ট্রেনচালক হিসেবে রেল বিভাগে যুক্ত হই। পরিবার যদি সাপোর্ট না করে তাহলে আপনি এ পেশায় আসতে পারবেন না। পাশাপাশি একজন পুরুষ ট্রেনচালকের সাপোর্ট প্রয়োজন রয়েছে। একজন নারী ট্রেনচালক হিসেবে সমাজে কে কী বললো সেটা দেখার বিষয় না। নারী হিসেবে যারা আমাকে ট্রেনচালকের সুযোগ করে দিয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।

তিনি আরও বলেন, আমার দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। সবচেয়ে ছোট ৯ মাসের মেয়েকে রেখে আমি ট্রেন চালাতে আসি। কাজে বের হলেও তারা কোনোদিন বিরক্ত হয় না।

৯ মাসের সন্তানকে বাড়িতে রেখে ট্রেন চালাচ্ছেন ফরিদা

লালমনিরহাট রেল স্টেশনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন ফরিদা আক্তার। চার সন্তানের মা হয়েও তিনি বেছে নিয়েছেন ট্রেন চালানোর মতো চ্যালেঞ্জিং পেশা। প্রথমে ভয় পেলেও এখন ট্রেনের স্টেশন থেকে স্টেশনে ছুটে চলার এই কাজটিকে ভালোবেসে ফেলেছেন। ২০১৪ সালে চাকরিতে যোগদান করে চাকরি জীবনের প্রায় ১০ বছর শেষ করেছেন।

ট্রেনচালক ফরিদা আক্তার নারী হওয়ায় তাকে প্রতিনিয়ত নানান সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু কখনো দমে যাননি ফরিদা। ট্রেনের যান্ত্রিক ত্রুটি হলে, নিজেই তা সমাধানের সাহস দেখান তিনি। তার এই সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বে মুগ্ধ রেল কর্তৃপক্ষ।

৯ মাসের সন্তানকে বাড়িতে রেখে ট্রেন চালাচ্ছেন ফরিদা

লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় লোকো ইনচার্জ কাজী সুমন বলেন, নারীরা এখন আর ঘরের মধ্যে বন্দি নেই। তারা সমাজের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। নারী চালকদের কাজে কোনো গাফিলতি নেই। ফরিদার মতো নারীরা দেখিয়ে দিচ্ছেন, কোনো পেশায় নারীদের জন্য অসম্ভব না। সাহস, অধ্যবসায় আর আত্মবিশ্বাস থাকলে প্রতিটি বাধা জয় করা সম্ভব।